ইন্ডিয়ান ভিসা

ইন্ডিয়ান ভিসা – দালালের খপ্পড়ে না পড়ে নিজেই করুন নিজের ভিসা

ইন্ডিয়ান ভিসা করার জন্য অনেকেই দালালের কাছে ধর্না দেন, এতে টাকাও খরচ হয় প্রচুর আর সেই সাথে উল্লেখ্য কারনে ভিসা বাতিল হবার সম্ভাবনাও থেকে যায়। অথচ একটু সতর্ক হলে, একটু সময় ব্যয় করে ইন্ডিয়ান ভিসার জন্য নিজে নিজে অ্যাপ্লাই করতে পারলে অযথা বাড়তি টাকা কেন খরচ করবেন? ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশনের জন্য সহজ কিছু ধাপ জানলে আর এর কাছে ওর কাছে ছুটতে হবে না।


১। প্রথমেই এই লিংকে ক্লিক করে ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশন ফর্মটি পূরণ করতে হবে।


২। ইন্ডিয়ান ভিসা ফর্মটি যথাযথ তথ্য দিয়ে পূরণ করুন। রেফারেন্সের জন্য এই লিংকে ক্লিক করে দেখে নিন কীভাবে ফর্মটি পূরণ করতে হবে।


৩। পাসপোর্টে যেভাবে নাম, জন্মতারিখ ও অন্যান্য তথ্যাদি আছে, ঠিক সেভাবেই ফর্মে তথ্যগুলো প্রদান করতে হবে। অন্যথায় ইন্ডিয়ান ভিসা বাতিল হয়ে যেতে পারে।


৪। পাসপোর্ট খেয়াল করে এর Date of Issue ও Date of Expiry ফর্মে পূরণ করবেন এবং আপনার নির্দিষ্ট ইন্ডিয়ান ভিসা টাইপ (ট্যুরিস্ট, বিজনেস, মেডিকেল বা অন্যান্য) সিলেক্ট করবেন। সেই সাথে কত মাসের ইন্ডিয়ান ভিসা চাচ্ছেন আপনি ৩, ৬, ১২ আপনার যেটা দরকার সেটা দিতে পারেন। তবে ১২ মাস দেয়াই ভালো।


৫। ইন্ডিয়ান ভিসা ফর্মটি প্রিন্ট করে জমা দেবার সময় সাথে এক কপি বাসার ইউটিলিটি বিল, অফিসের নো-অব্জেকশন সার্টিফিকেট অথবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র, জাতীয় পরিচয়পত্র, ব্যাংক স্টেটমেন্ট অথবা ডলার এনডোর্সমেন্ট সার্টিফিকেট, পাসপোর্ট এর ডাটা পেইজের ফটোকপি এবং দুই কপি ২*২ ছবি জমা দিতে হবে। উল্লেখ্য, ডিজিটাল ছবির হার্ডকপিই কিন্তু পরবর্তীতে ফর্ম জমা দেওয়ার সময় সাথে দিতে হবে। সেই সাথে আপনার ইউটিলিটি বিলে বাসার ঠিকানা যেভাবে লেখা, ফর্মে ঠিকঠিক সেভাবেই লিখেছেন কিনা- তা মিলিয়ে নিন। অন্যথায় ভিসা বাতিল হয়ে যেতে পারে।


৬। ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশনের সময়, এমনকি ইন্ডিয়ান ইমিগ্রেশনেও আপনার ইন্ডিয়ান রেফারেন্স চাওয়া হবে। সেখানে কোন আত্মীয় থাকলে তো খুবই ভালো কথা। না থাকলেও সমস্যা নেই। আপনার গন্তব্যের আশপাশে একটা হোটেল বুক করে ফেলুন। রেফারেন্সে সেই হোটেলের ঠিকানা, ফোন নম্বর ইত্যাদি তথ্যাদি ব্যবহার করুন। ফ্লাইট এক্সপার্ট থেকে যেকোন রুটের এয়ারটিকিট বা হোটেল বুক করতে এখানে ক্লিক করুন।


৭। সবচেয়ে গুরত্বপুর্ন অংশ হল পোর্ট সিলেকশন। মানে যাওয়া আসার জন্য কোন পোর্ট সিলেক্ট করবেন। আমাদের দেশে ৩ টা পোর্ট খুবই জনপ্রিয়ঃ হরিদাসপুর/বেনাপোল, ডাউকি/তামাবিল ও চ্যাংড়াবান্ধা/বুড়িমারি। যারা শিলং যেতে চান তারা BY ROAD DAWKI, যারা দার্জিলিং যেতে চান তারা Changrabandha ও যারা কলকাতা বা কলকাতা হয়ে ইন্ডিয়ার অন্য শহর যাবেন তারা Haridaspur সিলেক্ট করবেন। এখন আরেকটি বিষয় মাথায় রাখবেন যে আপনার যেকোন পোর্টের ইন্ডিয়ান ভিসা থাকলেই আপনি ইন্ডিয়ার যেকোন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে, Haridaspur দিয়ে গাড়িতে ও Gede দিয়ে রেলে যেতে পারবেন।


৮। পাসপোর্ট নং, ইস্যুকৃত স্থান, ইস্যুকৃত তারিখ এবং মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ যেমনটি আপনার বিদ্যমান বৈধ পাসপোর্টে উল্লেখিত, একই হতে হবে।


৯। ফর্ম পুরন শুরু করার পর একটা Temporary ID পাবেন। এটা সেইভ করে রাখুন। কারন কোন কারণে সার্ভারে সমস্যা থাকলে বা আপনি বাকি অংশ পরে পুরন করতে চাইলে এই লিংকে গিয়ে ‘Complete Partially Filled Form’-এ ক্লিক করে Temporary ID ও ক্যাপচা দিয়ে আবার আগের জায়গা থেকে শুরু করতে পারবেন। রেফারেন্সের জন্য ওয়েব ফাইল নম্বর নোট করে রাখুন।


১০। এবার কাছাকাছি যেকোন ইন্ডিয়ান ভিসা আবেদন কেন্দ্রে ভিসা প্রক্রিয়াকরণ ফি ৮০০ টাকা জমা দিতে হবে। আপাতত ইউপে –এর মাধ্যমে টাকা জমা দেওয়া হয়। অবশ্যই টাকা জমার পূর্বে রেজিস্টার্ড ইউ-পে এজেন্টকে জিজ্ঞেস করে নেবেন। তবে এই লিংকে গিয়ে চাইলে নিজেই নিজের ইন্ডিয়ান ভিসা ফি পরিশোধ করতে পারবেন। উল্লেখ্য, ফর্ম পূরন করার পর ৫ দিনের মাঝে জমা দিতে হবে, না হলে এক্সপায়ার হয়ে যাবে।


ফর্ম জমা দেওয়ার সময়কাল প্রতি সাধারণ কার্যদিবসে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। প্রচুর ভীড় থাকে বিধায় সকাল সকাল ক্যু ধরাই উত্তম। ইন্ডিয়ান ভিসা ফর্মের তথ্যাদি ভুলভাল পূরণ না করে থাকলে আপনার পাসপোর্টসহ যাবতীয় কাগজপত্র রেখে দেওয়া হবে। সপ্তাহখানেকের মধ্যে আপনার দেওয়া ফোন নম্বরে আইভ্যাক থেকে ম্যাসেজ চলে আসবে। এরপর নির্ধারিত দিনে যেয়ে শুধু পাসপোর্টটি নিয়ে আসবেন। এইতো!


আপনার ভারত-যাত্রা শুভ হোক!

By Rahat Muna

Thinker & Designer

Share This Post :