নভোএয়ার

নভোএয়ার এ ভ্রমণ – জেনে নিন গন্তব্য, টিকেট, ভাড়া, আসন বিন্যাস সহ নানা তথ্য

বাংলাদেশে যে কয়টি প্রাইভেট বিমান সংস্থা বেশ সুনামের সাথে তাদের ব্যাবসা পরিচালনা করে আসছেন, নভোএয়ার তাদের মধ্যে অন্যতম। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের চতুর্থ আভ্যান্তরিন বিমান সংস্থা হিসেবে নভোএয়ার যাত্রা শুরু করে। প্রথম দিকে শুধু ঢাকা – চট্টগ্রাম ফ্লাইট দিয়ে শুরু করলেও অতি অল্প সময়ের মধ্যে কক্সবাজার, যশোর ও সিলেটে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে। ২০১৮ সালে নভোএয়ারের পথচলার ষষ্ঠ বর্ষপূর্তি হল। এ উপলক্ষে আমরা তাদের জানাই আন্তরিক অভিনন্দন।


নভোএয়ার এর ফ্লাইট সমূহ

২০১৩ সালে মাত্র ২টি বিমান নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও খুব দ্রুত তারা তাদের বিমান ও ফ্লাইট সংখ্যা বাড়িয়ে ফেলে। এর পেছনে ছিল গ্রাহকদের ক্রমবর্ধমান চাহিদা আর নভোএয়ার এর সঠিক ব্যাবসা পরিচালনা। একারণে শুরু থেকেই বিমান যাত্রীদের কাছে নিজেদের একটি ইতিবাচক পরিচিতি সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়। সেকারণে সময়ের সাথে নভোএয়ার এর পরিচিতি ও গ্রাহক সংখ্যা দুইই বাড়তে থাকে।


বর্তমানে ঢাকা থেকে ৬ টি  ও অভ্যন্তরীণ ১ টি আন্তর্জাতিক গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা করছে নভোএয়ার। নভোএয়ার এর গন্তব্য গুলো হলঃ

  • ঢাকা – শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (হাব)
  • চট্টগ্রাম – শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর
  • রাজশাহী – শাহ মখদুম বিমানবন্দর
  • যশোর – যশোর বিমানবন্দর
  • কক্সবাজার – কক্সবাজার বিমানবন্দর
  • সিলেট – ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর
  • সৈয়দপুর – সৈয়দপুর বিমানবন্দর
  • আন্তর্জাতিক  – কলকাতা – নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

 

২০১৮ সালে ষষ্ঠ বছর পূর্তি এবং গ্রাহকদের চাহিদা পুরন করার লক্ষ্যে নভোএয়ার আভ্যান্তরিন রুটে ফ্লাইট সংখ্যা বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা নেয়। সে পরিকল্পনা অনুযায়ী এপ্রিল মাস থেকে নভোএয়ারের দৈনিক ফ্লাইট সংখ্যা নীচে দেয়া হলঃ

নভোএয়ার তাদের যাত্রা শুরু করেছিল এমব্রেয়ার ইআরজে ১৪৫মডেলের উড়োজাহাজ দিয়ে। এর প্রস্তুতকারক ব্রাজিলের এম্ব্রেয়ার নামক কোম্পানি। এই মডেলের উড়োজাহাজগুলো ৫০ জন যাত্রী পরিবহনে সক্ষম ছিল।


পরবর্তীতে নভোএয়ার তাদের উড়োজাহাজের মডেল পরিবর্তন করে। নতুন মডেল হিসেবে তারা এ টি আর ৭২-৫০০ মডেলকে বেছে নেয়। এই মডেলের বিমানগুলো তৈরি করে ফ্রান্স-ইতালির যৌথ উদ্যোগের কোম্পানি এ টি আর। এই বিমান গুলি সিঙ্গেল ক্লাস আসন বিন্যাসে ৭২ জন যাত্রী বহন করতে সক্ষম। এই বিমানগুলোতে শক্তিশালী পিডাব্লিউ১২৭এফ ইঞ্জিন এবং দুই পাশে ৬ ব্লেডের দুইটি বড় প্রোপেলার সংযুক্ত করা আছে। এই মডেলের বিমান গুলোতে বেশ কার্যকরী অটো পাইলট রয়েছে যা যেকোন প্রতিকুল পরিস্থিতিতে অনেক সাহায্য করে। তাছাড়া কার্গোর জন্যে যথেষ্ট জায়গাও আছে।


নভোএয়ারের টিকেট মূল্য

নভোএয়ার শুরু থেকেই তাদের বিমান টিকিটের মূল্য সীমাবদ্ধ রাখার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নভোএয়ার সবসময়ই চেয়েছে বাংলাদেশে আকশপথে ভ্রমণকে আরও জনপ্রিয় করতে। তাই তাদের বিমান ভাড়া যেন উচ্চবিত্তের পাশাপাশি মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্তদের হাতের নাগালে থাকে, সে ব্যাপারে তারা সদা সচেষ্ট থেকেছে।


কিভাবে নভোএয়ার টিকিট কাটবেন

নভোএয়ারের টিকিট কাটতে পারবেন অফলাইন এবং অনলাইন ২ ভাবেই।

নভোএয়ারের দেশ ব্যাপি ছড়ানো সেলস সেন্টারোগুলো থেকে নভোএয়ারের টিকিট কাটতে পারেন। এছাড়া তাদের ওয়েবসাইটও আছে।

যারা কম মুল্যে অনলাইনে নভোএয়ার এর এয়ার টিকিট কিনতে চান তারা ফ্লাইট এক্সপার্টের ওয়েবসাইট থেকে নভোএয়ার সহ  যেকোন বিমানের যেকোন গন্তব্যের  টিকিট কাটতে পারবেন অতি সহজেই, ঘরে বসেই।


ওয়েবসাইটঃ https://www.flightexpert.com

কোন প্রশ্ন থাকলে ফোন করুনঃ +৮৮-০৯৬১৭-১১১-৮৮৮

যোগাযোগের ঠিকানাঃ

৯০/১ মতিঝিল সিটি সেন্টার

লেভেল ২৫ – বি -১, (লিফটের ২৬ তলা )

ঢাকা – ১০০০, বাংলাদেশ।


Flight Expert
90/1 Motijheel City Centre
Level 25-B-1, Lift 26
Dhaka 1000, Bangladesh


অফলাইনে টিকিট কাটতে চাইলে নভোএয়ারের অফিস থেকে কেটে নিতে পারেন। নভোএয়ারের ঢাকা অফিসের ঠিকানাঃ

বাড়ী – ৫০, রোড – ১১, ব্লক এফ

বনানী, ঢাকা।


এছাড়া সারা দেশে ২১ টি সেলস এবং সার্ভিস সেন্টার রয়েছে। এছাড়া কলকাতাতে নভোএয়ারের ২ টি অফিস রয়েছে।


নভোএয়ারই দেশের প্রথম বিমান সংস্থা যারা যাত্রীদের সুবিধার কথা ভেবে ফ্লাইয়ার প্রোগ্রাম শুরু করে। এই প্রোগ্রামের নাম স্মাইলস। এই প্রোগ্রামের উদ্দেশ্য হল যারা নিয়মিত যাত্রা করেন তারা যেন একটু বাড়তি সুবিধা পায়। এই সুবিধা ভোগ করতে হলে গ্রাহককে একটি স্মাইলস একাউণ্ট করতে হয়। এই একাউণ্টে গ্রাহকের ভ্রমণ সংক্রান্ত তথ্যাদি সংরক্ষিত থাকবে। গ্রাহক যত মাইল নভোএয়ারে ভ্রমণ করবেন তত পয়েন্ট যোগ হবে।পরবর্তীতে নির্দিষ্ট পরিমান পয়েন্ট জমা হলে সেই পয়েন্টের বিনিময়ে গ্রাহক বেশ কিছু সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।

 

নভোএয়ারের আসন ব্যাবস্থা

বর্তমানে এদের বহরে ৫ টি বিমান আছে। এর সবগুলোই এ টি আর ৭২-৫০০ মডেলের। নভোএয়ার তাদের যাত্রীদের বসার জন্য বেশ ভাল ব্যাবস্থা রেখেছে। তাদের বিমান গুলোতে সাধারনত ২-২ স্টাইলে আসন বিন্যাস করে থাকে। প্রত্যেক বিমানে ৬৮ জন যাত্রী বহন করা হয়। এতে করে সিটে সামনে পেছনে যথেষ্ট জায়গা থাকে এবং যাত্রীদের জন্য বেশ আরামদায়ক হয়। সিট গুলো বেশ চমৎকার এবং আকারে যথেষ্ট বড়। সিটগুলো আরামদায়ক রেক্সিন কভার দিয়ে মোড়ানো থাকে।


নভোএয়ারে যাত্রীদের আপ্যায়ন

টিকিটের দাম কম রাখলেও নভো তাদের সম্মানিত যাত্রীদের আপ্যায়নে কোন কমতি রাখে না। এখানে আছে বেশ স্মার্ট এবং দক্ষ কিছু বিমান বালা, যারা আপনার  যেকোন প্রয়োজন বা সমস্যার দিকে খেয়াল রাখবে। নভোএয়ারে সবগুলো ফ্লাইটেই স্ন্যাক্স এর বক্স দেয়া হয়। সাথে পানি ও সফট ড্রিংকস এর বোতল থাকে। স্বল্প সময়ের যাত্রা হিসেবে এটা বেশ ভাল স্ন্যাক্সস এ কথা বলাই যায়।


নভোএয়ার তাদের ব্যাবসার স্লোগান নির্ধারণ করেছিল “Truly Yours” বা একান্তই আপনার। তারা তাদের কাজে কর্মেও সেটা প্রমান করতে চায়। প্রথম থেকেই তারা গ্রাহকদের সুবিধা এবং অসুবিধা কে একান্ত গুরুত্তের সাথে দেখে আসছে। তাঁর ফলস্বরূপ আজকে বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় বিমান সংস্থা তারা। এই জনপ্রিয়তাকেই পুঁজি করেই আরও সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়াই এখন লক্ষ্য। ভবিষ্যতে নভোএয়ার তাদের গন্তব্যের সংখ্যাও বাড়াতে ইচ্ছুক। একটি বাংলাদেশী এয়ারলাইন্স হিসেবে আমরা সবাই নভোএয়ারের এই অগ্রগতিকে সাধুবাদ ও অভিনন্দন জানাই।


**বিমান ভাড়া পরিবর্তনশীল এবং এক্ষেত্রে নভোএয়ারের সিদ্ধান্তই প্রাধান্য পাবে।

By Rahat Muna

Thinker & Designer

Share This Post :