টরন্টো ভ্রমণঃ দর্শনীয় স্থান ও ভ্রমণ খরচ

টরন্টো ভ্রমণঃ দর্শনীয় স্থান ও ভ্রমণ খরচ

কানাডার অন্টারিও প্রদেশের রাজধানী টরন্টো। এটি কানাডার সবচেয়ে বেশি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা এবং সেই সাথে পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। প্রতি বছর প্রচুর বাংলাদেশী শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার্থে কানাডায় পাড়ি জমান। এছাড়া পি আর নিয়েও অনেকে সপরিবারে ছুটে যান কানাডায়। এরা সবাই সাধারণত টরন্টো বা এর আশেপাশের এলাকাতে বসবাস করেন। পর্যটক বা অভিবাসী- সবার জন্যই কানাডায় গিয়ে দেখার ও অভিজ্ঞতা নেয়ার মতো অনেক কিছুই আছে।


এই ব্লগে থাকছে আপনার টরন্টো ভ্রমণ এ দর্শনীয় স্থান, টরন্টো কিভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন, ভ্রমণ খরচ কেমন হতে পারে এই নিয়ে বিস্তারিত। 


টরন্টো ভ্রমণঃ দর্শনীয় স্থান


টরন্টোর সেরা ৫টি দর্শনীয় স্থান এর বিবরণ নিম্নে দেয়া হলোঃ


১। নায়াগ্রা ফলস



যদিও এটি ঠিক টরন্টোতে অবস্থিত নয়, টরন্টো থেকে ১৩০ কিমি দূরে দেড়-দুই ঘন্টা কার রাইড দূরত্বে অবস্থিত তাও টরন্টোর সবচেয়ে আকর্ষনীয় পর্যটক স্থান হিসেবে বিবেচনা করা হয় নায়াগ্রা ফলস কে। নায়াগ্রা ফলস মূলত আমেরিকা ও কানাডাকে আলাদা করেছে। বিশালাকার আর অসাধারণ সুন্দর এই জলপ্রপাতটি যে কাউকে মুগ্ধ করে দেবার জন্য যথেষ্ট। নায়াগ্রা জলপ্রপাতটির মূল বিশেষত্ব এর তীব্র স্রোতের জলরাশি যা একে বিশ্বের অন্য সব জলপ্রপাত থেকে আলাদা করেছে।


নায়াগ্রা দেখতে যেতে চাইলে আপনি ডে ট্যুর ও প্ল্যান করতে পারেন আবার নাইট স্টে ও প্ল্যান করতে পারেন। থাকার ও আশপাশ ঘুরে দেখার মতো অনেক জায়গা আছে নায়াগ্রা ফলসের আশেপাশে। এলাকাটি বেশিরভাগ সময়ই পর্যটকদের পদচারণায় ব্যস্ত থাকে। এখানে জলপ্রপাত দেখা ছাড়াও মিউজিক শো, লাইট শো, ফায়ারওয়ার্ক শো সহ নানা রকমের বিনোদনমূলক ব্যবস্থা রয়েছে।


২/ সিএন টাওয়ার



টরন্টোর বিখ্যাত সিএন টাওয়ার দুবাইয়ের বুর্জ খলিফা নির্মাণের আগ পর্যন্ত অর্থাৎ ২০০৭ সাল পর্যন্ত বিশ্বের সর্বোচ্চ দালানের রেকর্ড অধিকার করে ছিলো। ১,৮১৫ ফুট উঁচু এই দালানটি বর্তমানে কানাডার টেলিযোগাযোগ ও সম্প্রচার কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। দালানটির মাথায় স্যাটেলাইট বসানো আছে যার মাধ্যমে দেশব্যাপী সংবাদ ও টেলিভিশন শোগুলো সম্প্রচারিত হয়। শহরের যে কোন স্থানে দাঁড়ালেই দালানটি আপনার চোখে পড়বে।


কিন্তু আপনি যদি দালানটি আরো কাছ থেকে দেখতে চান এবং অবজারভেশন ডেক থেকে টরন্টোর স্কাইলাইন উপভোগ করতে চান তবে সোজা চলে যেতে হবে সিএন টাওয়ারের সর্বোচ্চ ফ্লোরে। টিকেট কেটে ঢুকলে অবজারভেশন ডেক ছাড়াও এজ ওয়াক, রিভলভিং রেস্টুরেন্টসহ আরো অনেক সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন।


৩/ রয়্যাল অন্টারিও মিউজিয়াম



কানাডার বৃহত্তম এবং সর্বাধিক পরিদর্শন করা জাদুঘর হল রয়্যাল অন্টারিও মিউজিয়াম। এই জাদুঘরে ঐতিহ্যবাহী এবং সমসাময়িক শিল্প এবং বিশ্ব সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক ইতিহাস সম্পর্কিত প্রত্নবস্তু রয়েছে। জাদুঘরটি যখন নির্মিত হয়েছিল, তখন এর সংগ্রহের একটি বড় অংশ টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসেছিল। সেই থেকে জাদুঘর ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে আসছে।


আপনি রয়্যাল অন্টারিও মিউজিয়াম পরিদর্শন করতে গেলে বিভিন্ন প্রদর্শনী এবং গ্যালারী উপভোগ করতে পারবেন। জাদুঘরে ৬০ লক্ষের ও বেশি স্বতন্ত্র বস্তু সহ ৪০টি গ্যালারী রয়েছে। এর মধ্যে ডাইনোসরের জীবাশ্ম এবং অন্যান্য নমুনা, খনিজ এবং উল্কাপিণ্ডের একটি সংগ্রহ রয়েছে; এছাড়াও রয়েছে কানাডা, ইউরোপ, আফ্রিকা এবং এশিয়া থেকে সংগৃহীত ঐতিহাসিক শিল্প এবং প্রত্নবস্তু।


৪/ রিপলি অ্যাকুয়ারিয়াম কানাডা



আপনার ভ্রমণসঙ্গী হিসেবে যদি আপনার বাচ্চা থাকে তবে তার জন্য আছে রিপলি অ্যাকুয়ারিয়াম যা বাচ্চাদের জন্য অনেক উপভোগ্য হবে। এটি সিএন টাওয়ারের কাছাকাছি তাই এটি আপনার জন্য সহজেই অ্যাক্সেসযোগ্য। রিপলি অ্যাকুয়ারিয়াম একটি পাবলিক অ্যাকোয়ারিয়াম। এটি বিশ্বের বিভিন্ন অংশ থেকে সংগৃহীত সামুদ্রিক এবং স্বাদু পানির আবাসস্থল যেখানে সবমিলিয়ে ৫.৭ মিলিয়ন লিটার পানি রয়েছে। এই অ্যাকুয়ারিয়ামে ২০,০০০ বিদেশী মাছ এবং সামুদ্রিক প্রাণী রয়েছে। আপনার বাচ্চাকে এখানে নিয়ে যান এবং সামুদ্রিক জীবন ও প্রাণের চিহ্ন দেখে তাদের আনন্দ উপভোগ করুন।


৫/ কাসা লোমা



যদি ঐতিহাসিক প্রাসাদ এবং কানাডিয়ান ইতিহাসের স্বাদ পেতে চান তবে আমরা আপনাকে কাসা লোমা দেখার পরামর্শ দেবো। এই গথিক স্টাইলের প্রাসাদটি মিডটাউন টরন্টোর একটি ঐতিহাসিক হাউজ মিউজিয়াম এবং ল্যান্ডমার্ক হিসেবে বিখ্যাত। কাসা লোমা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪৬০ ফুট উপরে অবস্থিত। এটি চলচ্চিত্র এবং টিভি অনুষ্ঠানের জন্য একটি জনপ্রিয় শ্যুটিং সাইট এবং স্থানীয়দের বিবাহের জন্য একটি দুর্দান্ত ভেন্যু। স্থানটি প্রায়ই প্রাইভেট কোম্পানিগুলিকে তাদের মিটিং ইত্যাদির ভেন্যু হিসেবে ভাড়া দেওয়া হয়।


কিভাবে টরন্টো যাবেন



টরন্টো যেতে হলে প্রথমে আপনাকে কানাডা ভিজিট ভিসা ২০২৩ করতে হবে। কানাডা ভিসা ২০২৩ এর জন্য কিভাবে এপ্লাই করবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন কানাডা গভমেন্ট এর ওয়েবসাইটটি। কানাডা ভিসা ২০২৩ প্রসেসিং সার্ভিস পেতে কল করুন +৮৮-০৯৬১৭-১১১-৮৮৮ নাম্বারে অথবা ইমেইলে যোগাযোগ করুন


কাতার এয়ারওয়েজ, এমিরেটস, এবং টার্কিশ এয়ারলাইনস থেকে প্রতিদিন অসংখ্য ফ্লাইট ছেড়ে যায় টরন্টোর উদ্দেশ্যে। ঢাকা থেকে টরন্টো বিমান ভাড়া কত জানতে ভিজিট করুন flightexpert.com। কমপক্ষে এক মাস আগে টিকেট কাটলে ভাড়া অনেক কমে পাবেন।


কমপক্ষে এক সপ্তাহ হাতে নিয়ে টরন্টো ঘুরতে গেলে সব স্পট কভার করতে ও টরন্টো শহর ভালো করে উপভোগ করতে পারবেন।


টরন্টো গিয়ে কোথায় থাকবেন?



টরন্টো গিয়ে থাকার মতো কিছু বাজেট হোটেল হচ্ছেঃ



টরন্টোতে হোটেল বুক করতে চাইলে বা হোটেল সম্পর্কিত যেকোন তথ্যের জন্য কল করুন +৮৮-০৯৬১৭-১১১-৮৮৮ নাম্বারে অথবা ইমেইলে যোগাযোগ করুন। 


টরন্টো ভ্রমণ খরচ কত?



বাংলাদেশ থেকে টরন্টো ভ্রমণ খরচ নিম্নরুপঃ


রিটার্ন প্লেন ভাড়া - ১,৫০,০০০ - ১,৭০,০০০ টাকা

হোটেল রুম ভাড়া - ৮,০০০ - ১০,০০০ টাকা

সিম কার্ড - ২,৩০০ - ৫,০০০ টাকা

খাবার - ১,০০০ - ১,৫০০ টাকা


সুতরাং, যাতায়াত এবং প্রবেশ ফি বাদ দিয়ে ৩ দিনের জন্য আপনার টরন্টো ভ্রমণ খরচ পড়বে জনপ্রতি প্রায় ২,১০,০০০ টাকার মতো। হোটেল এবং খাবার করচ কমাতে পারলে খরচ আরো অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব। 


পরিশেষে,


তো এই ছিলো টরন্টো ভ্রমণ নিয়ে বিস্তারিত। ঢাকা থেকে টরন্টো বিমান ভাড়া সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন flightexpert.com। ভিসা ও হোটেল সম্পর্কিত তথ্যের জন্য কল করুন +৮৮-০৯৬১৭-১১১-৮৮৮ নাম্বারে অথবা ইমেইলে যোগাযোগ করুন। 


ব্লগটি ভালো লাগলে ও আরো ব্লগ পড়তে চাইলে ভিজিট করুন আমাদের ব্লগ পেইজটি


Related Blogs:



By Rahat Muna

Thinker & Designer

Share This Post :