নেপাল ভ্রমণ

নেপাল ভ্রমণের খুঁটিনাটি

বাংলাদেশ থেকে নেপাল যেতে কোন অগ্রিম ভিসার প্রয়োজন নেই। ফ্লাইট এক্সপার্ট থেকে টিকিট বুকিং করে যেকোন মূহুর্তেই পাড়ি জমাতে পারেন সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের দেশে।


ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কাঠমুন্ডুর ত্রিভুবন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে যেতে সময় লাগে প্রায় ১ ঘন্টা ১৫ মিনিট। নেপালে এয়ারপোর্টের ঝামেলা শেষ করেই নেপাল ট্যুরিজমের একটা ফ্রি ম্যাপ নিয়ে নিন, কাজে লাগতেও পারে। এয়ারপোর্টেই মানি এক্সচেঞ্জ সুবিধা আছে। যদিও ডলার রেট হিসেবে পাবেন অনেক কম। ঘোরাঘুরির জন্য প্রথমে কাঠমুণ্ড থেকেই শুরু করতে পারেন। শহরের মন্দির গুলো ঘুরে দেখতে পারেন । সার্কভুক্ত দেশের নাগরিকদের জন্য টিকেট এর দাম অনেক কম। বসন্তপুর দুর্বার স্কয়ার, গার্ডেন অফ ড্রিমস, লিম্বিনি, কোপান, সেনচেন মনাস্ট্রির মতো প্রচুর দর্শনীয় স্থান ঘুরতে পারবেন সেখানে।


কাঠমুন্ডু হতে ৩২ কিলোমিটার দুরত্বেই বিশ্বের সবচেয়ে উচু গ্রাম, নাগরকোট। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২১৭৫ মিটার। কাঠমুন্ডু থেকে নাগরকোটের রাস্তার উচ্চতা যা, তাতে দিনের বেলা কোনো দুর্বলচিত্তের মানুষ যাতায়াত করলে নিশ্চিত ভয় পেয়ে যাবার কথা। তবে সেখানের মনোরম প্রকৃতি চুম্বকের মতো আপনাকে টানবে, তা বাজি ধরেই বলা যায়।


নাগরকোটে হোটেলে এক রাত থেকে ভোর বেলায় সূর্যদোয়ের সময় ব্যালকনি থেকে এভারেস্ট এর শৃঙ্গ দেখা যেতে পারে। ভোরবেলায় সূর্যের আলো শুভ্র তুষারবেষ্টিত এভারেস্ট শৃঙ্গে পড়বার সাথে সাথে আশেপাশের সবকিছু কেমন মায়াবী সোনালী বর্ণ ধারণ করে- এতো অদ্ভূত সুন্দর দৃশ্য আমাদের প্রতিদিনের পৃথিবীতে খুব কমই দেখতে পাবেন।

 

নাগারকোট থেকে পোখারা ২২৬ কি.মি. পথ, এবং গাড়িতে প্রায় ৭ ঘন্টার ভ্রমণ। সময় বাঁচাতে চাইলে ফ্লাই করেও যেতে পারেন। পোখারার ন্যাচারাল বিউটির কথা বাদই দিলাম, সেই সাথে পাবেন রাফটিং, প্যারাগ্লাইডিং,কায়াকিং,বাঞ্জি জাম্পি,ক্যানিং ইত্যাদির সুবিধা। রিভার রাফটিং একটি টিম স্পোর্টস। প্রায় ৩৫ ডলার করে খরচ হয় এতে। একটা বাতাসের ফোলানো নৌকায় প্রায় আটজনের জায়গা হয়। সাথে থাকবেন একজন গাইড। পোখারার বিখ‍্যাত আকর্ষণ হলো “ফেওয়া লেক”। লেকসাইডে জনপ্রতি প্রতি রাতের ভাড়া মাত্র ৬ ডলার থেকে শুরু করে ৪০০ ডলারের হোটেলও পাবেন সেখানে।


পোখারায় সারাংকোট নামের একটা জায়গা আছে। মূল পোখারা থেকে ৪৫ মিনিট দুরত্বে জায়গাটা পাহাড়ের অনেক উচুতে, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৬০০ মিটার উচুতে। ট্রেকিং ব্যতীত পোখারা শহর থেকে অন্নপূর্ণা রেঞ্জ দেখার জন্যে সবচেয়ে সুন্দর স্থান এটা। বলা যায় প্রকৃতি তার রূপ, রঙ সব মেলে ধরেছে এই ছোট্ট এলাকায়। এখানে বিভিন্ন উচ্চতায় কিছু স্টেশন বা পয়েণ্ট রয়েছে। দলবেঁধে সেখানে ঘোরার মজাই অন্যরকম। 


নেপালের অন্যতম দর্শনীয় স্থান থামেল। বিভিন্ন দামে থামেলের হোটেল ভাড়া পাওয়া যায়। তবে সেখানে বিদ্যুৎ সুবিধা না থাকায় আগে থেকে জেনে নিবেন জেনারেটর সুবিধা আছে কিনা। থামেলে ট্রেকিংও করতে পারবেন।


তবে গোটা নেপাল ঘুরবার জন্য অবশ্যই সাথে পাসপোর্ট রাখবেন। ন্যাশনাল পার্ক/কনজারভেশন এরিয়া গুলাতে ট্রেকিং এ গেলে পারমিশন আর ট্রেকার ইনফো কার্ড নিতে হবে। এই জন্য ৪ কপি ফটো লাগে। তাছাড়া বাংলাদেশ থেকে নেপাল ভ্রমণের আগে অন অ্যারাইভাল ভিসার জন্যে অবশ্যই এই ফর্মটি ডাউনলোড করে নিনঃ


ডাউনলোড


ঢাকা থেকে নেপাল কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে আকাশ পথে নেপাল যেতে পারবেন। এতে সময় যেমন বাঁচবে, ভ্রমণটাও তেমনি আরামদায়ক হবে।

ঢাকা থেকে নেপাল এর বিমান টিকিট সুলভ মুল্যে পেতে হলে যোগাযোগ করুন আমাদের কল সেন্টার নম্বরঃ +88-09617-111-888 অথবা মোবাইল নম্বর +880 1847291 388। অথবা ভিজিট করুনঃ https://www.flightexpert.com

 

ফ্রি ভিসা এবং নেপাল ভ্রমণ নিয়ে কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য

১। হিন্দি ভাষা জানা থাকলে খুব সুবিধা হবে নেপালিদের সাথে যোগাযোগ করতে। ওখানে প্রায় সবাই হিন্দিতে কথা বলেতে পারে।


২। নেপাল ভ্রমণ সিজন শুরু হয় অক্টোবর থেকে এবং চলে মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত। তাই এসময় বেশী ভিড় থাকে। ভিড় এড়াতে চাইলে আগস্ট – সেপ্টেম্বর মাসের দিকে ভ্রমণ করুন।


৩। চেষ্টা করবেন কমপক্ষে ১ মাস আগে থেকে বুকিং দিতে। আপনার বিমান ভাড়া, সময় সহ শিডিউল নির্ধারণ করতে পারবেন ফ্লাইট এক্সপার্ট সাইট থেকেঃ https://www.flightexpert.com


৪। নেপাল যাবার সময় বিমানের ডান দিকে এবং ফেরার সময় বাম দিকে সিট নেয়ার চেষ্টা করবেন। সেক্ষেত্রে আকাশ পরিস্কার থাকলে বিমান থেকেই হিমালয় দেখতে পাবেন।


৫। নেপাল বিমানবন্দরে অবতরণের পর সার্ক ভুক্ত দেশের জন্য আলাদা ভিসা লাইন পাবেন। অন-আরাইভাল ভিসার জন্য সেই লাইনে দাড়িয়ে যাবেন।


৬। বছরে ১ বার নেপাল গেলে সেক্ষেত্রে কোন ভিসা ফি লাগবে না। দ্বিতীয়বার থেকে ফি প্রযোজ্য।


৭। ভিসার জন্য ১টি বোর্ডিং কার্ড এবং ১টি ভিসা ফর্ম পূরণ করতে হয়। এর সাথে  ১ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি লাগবে। বিমানে থাকাকালীন অবস্থায় এয়ারহোস্টেসরা আপনাকে এগুলো দিয়ে দিবে। এয়ারপোর্টে গেলে ওরাই আপনাকে ছবি লাগিয়ে দিবে।


৮। ভিসা দেবার সময় সাধারণত আপনাকে কোন প্রশ্ন করা হবে না। সর্বনিম্ন ৩০ দিনের ভিসা পেয়ে যাবেন অতি দ্রুত।


৯। সাধারণত সীম কার্ড কেনা ছাড়া অন্য সময় ডকুমেন্টস লাগে না। তবে সমস্যা এড়াতে পাসপোর্ট ফটোকপি, জাতীয় পরিচয়পত্র, কয়েক পাসপোর্ট সাইজ ছবি, হোটেল বুকিং এর প্রিন্টেড কপি ইত্যাদি সাথে রাখুন।

By Rahat Muna

Thinker & Designer

Share This Post :