List of Best Hotels in Bangladesh
সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক উভয়ভাবেই বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম নিউ ইয়র্ক। এটি মার্কিন মুলুকের সবচেয়ে জনবহুল শহরও বটে। বিশ্বের প্রায় সব দেশ থেকে অভিবাসীরা এসে এই শহরে বসবাস করছে যার কারণে এখানে নানান ধর্ম, বর্ণ ও সংস্কৃতির মানুষের মিলনমেলা বসেছে। নিউ ইয়র্ক সত্যিকারের এক “গ্লোবাল ভিলেজ” যেখানে সব ধরণের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করে। নিউ ইয়র্কের এই দারুণ বৈশিষ্টের জন্য শহরটি পর্যটকদের কাছে এত বেশি আকর্ষণীয়।
নিউ ইয়র্কের মতো এক জায়গায় এত ধরণের মানুষ, খাবার ও সংস্কৃতির দেখা আপনি বিশ্বের আর কোথাও পাবেন না। শহরটিতে ঘুরে দেখার মতো অনেক কিছুই আছে। তাই কমপক্ষে ৩-৫ দিন সময় নিয়ে নিউ ইয়র্ক ঘুরে আসতে পারলে ভালো।
আমাদের নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ গাইডে পাবেন নিউ ইয়র্কের দর্শনীয় স্থান, কিভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন, এবং নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ খরচসহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলি।
নিউ ইয়র্কের দর্শনীয় স্থানগুলো নিম্নরুপঃ
নিউ ইয়র্ক গিয়ে সবাই সবার আগে যে জায়গাটা ঘুরতে যায় সেটা হচ্ছে টাইমস স্কয়ার। হলিউড বা বলিউড মুভিতে এই জায়গাটি দেখা যায় হরহামেশাই। জায়গাটি সবসময়ই লোকে লোকারণ্য থাকে। পর্যটকরা নিউ ইয়র্ক এসে এই জায়গাতেই ভীড় করে সবচেয়ে বেশি। এটি মূলত ৪ রাস্তার মোড়ে একটি চত্তর যেটির আশেপাশের বহুতল দালানের দেয়ালে বিশাল বিশাল সাইজের অসংখ্য বিলবোর্ড ঝোলানো আছে। বিলবোর্ডগুলোতে সারা বছরজুড়ে বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ডগুলোর বিজ্ঞাপন প্রচারিত হয়।
টাইমস স্কয়ার এ রাস্তার ওপর নানানরকম বিনোদনমূলক কর্মকান্ডে ব্যস্ত থাকে স্থানীয় এন্টারটেইনাররা। গান, নাচ, মূকাভিনয়, ইত্যাদিতে মাতিয়ে রাখে পর্যটকদের। টাইমস স্কয়ারের সাজসজ্জা সবচেয়ে সুন্দর লাগে নিউ ইয়ার্স ইভের সময়। নতুন বছর শুরু হয় বিখ্যাত “বল ড্রপ” ইভেন্ট দিয়ে। এছাড়াও ক্রিসমাস ও অন্যান্য বিশেষ দিনেও টাইমস স্কয়ার সাজে অপরুপ সাজে। আর বছরের যে কোন দিন রাত ১২টায় বিলবোর্ডগুলোতে প্রদর্শিত হয় মডার্ন পেইন্টিং ও আর্ট।
নিউ ইয়র্কের মতো ব্যস্ততম শহরের ঠিক মাঝখানে রয়েছে ৮৪৩ একরের বিশাল এক পার্ক সেন্ট্রাল পার্ক। সম্পূর্ণ মনুষ্য নির্মিত এই পার্কটিতে রয়েছে অসংখ্য কৃত্রিম ফোয়ারা, ঝর্ণা, তৃণভূমি, এবং তার চারপাশে গাছপালায় ঘেরা বনসদৃশ এলাকা। ব্যস্ত নাগরিক জীবনে সেন্ট্রাল পার্ক নিউ ইয়র্কবাসীকে এনে দেয় স্বস্তির নিঃশ্বাস।
এখানে এসে নির্দ্বিধায় পুরো দিন কাটিয়ে দিতে পারবেন চাইলে। বই পড়তে পড়তে বা পরিবারের সাথে পিকনিক করে সময় কোন দিক দিয়ে কেটে যাবে টেরও পাবেন না। বাচ্চাদের জন্যও এখানে রয়েছে সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশে খেলা করা সহ নানারকম এক্টিভিটি। এছাড়া এই পার্কে সিলিব্রিটিরাও ঘুরতে আসেন। আপনার কপাল ভালো থাকলে দেখা হয়ে যেতেও পারে কোন না কোন সেলিব্রিটির সাথে!
নিউ ইয়র্ক যাবেন আর ঐতিহাসিক স্ট্যাচু অব লিবার্টি দেখবেন না তা কি হয়? এটি নিউ ইয়র্কের লিবার্টি আইল্যান্ডে অবস্থিত। যুক্তরাষ্ট্রের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে ১৮৮৬ সালে ফ্রান্সের জনগণ কর্তৃক আমেরিকাকে এই ভাষ্কর্যটি উপহার দেয়া হয়। কপারের তৈরি ভাষ্কর্যটি রোমান স্বাধীনতার দেবী “লিবার্টির”। রোব পরা দেবী লিবার্টির এক হাতে মশাল আরেক হাতে একটি ট্যাবলেট যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা ঘোষণার তারিখ লেখা রয়েছে।
স্ট্যাচু অব লিবার্টি দেখতে হলে আপনাকে ফেরীতে করে যেতে হবে। এজন্য আপনাকে আগে StatueCityCruises.com থেকে টিকেট কাটতে হবে। টিকেটের মধ্যে ফেরীর রিটার্ন ট্রিপ, ভাষ্কর্য ও এর সংলগ্ন জাদুঘরের প্রবেশ মূল্য, এবং অডিও গাইড সংযুক্ত থাকে। আপনি চাইলে বেশ কিছু ডলার খরচ ক্রে ভাষ্কর্যের মুকুটে উঠে চারদিকের ভিউ দেখতে পারেন তবে এজন্য আপনাকে কমপক্ষে ৬ মাস আগে টিকেট কাটতে হতে পারে।
৯ই সেপ্টেম্বর, ২০০১ এর সেই ভয়াল দিনের কথা মনে আছে কী? যেদিন স্বরণকালের ভয়াবহতম আক্রমণের স্বীকার হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র? সেদিন নিউ ইয়র্কের টুইন টাওয়ারে হামলা করে সন্ত্রাসীরা। টুইন টাওয়ার সম্পূর্ণরুপে ধ্বংস হয়ে যায়, মারা যান ২,৯৭৭ জন মানুষ। নাইন ইলেভেন টেরর আট্যাকে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে সেই টুইন টাওয়ারের ধ্বংসস্তুপের ওপরেই বানানো হয়েছে নাইন/ইলেভেন মেমোরিয়াল।
এখানে গেলে সবার আগে আপনার চোখে পড়বে দুটি বিশালাকার পুল যার চারপাশ দিয়ে ঝর্ণা বয়ে চলেছে আর মাঝখানটা একদম খালি। এ যেন স্বজন হারানো নিউ ইয়র্কের মানুষের হৃদয়ের শূণ্যতা ও চোখের পানিরই প্রতিচ্ছবি। পুলের চারদিকে ব্রোঞ্জ প্যানেলে নিহতদের নাম খোদাই করা আছে। নামগুলো পড়তে পড়তে যে কারো চোখে পানি এসে যায়। মেমোরিয়ালের চারপাশে অসংখ্য গাছগাছালির সমাবেশে জায়গাটি নিভৃতে দুদণ্ড বসে থাকতে বাধ্য করবে আপনাকে।
নিউ ইয়র্কের ঐতিহাসিক ব্রুকলিন ব্রিজটি শহরের ম্যানহাটান ও ব্রুকলিন এলাকাকে সংযুক্ত করেছে। এটি বিখ্যাত ইস্ট রিভারের ওপর নির্মিত নিউ ইয়র্কের ব্যস্ততম ব্রিজ। হাজার হাজার স্থানীয় ও পর্যটক প্রতিদিন এই ব্রিজ দিয়ে এপার থেকে ওপারে যায়। ২ কিলোমিটার লম্বা এই ব্রিজে গাড়ির রাস্তার পাশাপাশি পথচারীদের হাঁটার জন্য ওয়াকওয়ে ও বাইকারদের জন্য আলাদা লেন আছে।
ব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে আপনি নিউ ইয়র্ক শহরের অসাধারণ ভিউ পাবেন। সেই সাথে যত খুশি ছবি তোলা্র সুযোগ তো আছেই! তবে সেজন্য ভোরে সূর্য ফোটার সাথে সাথে যেতে পারলে ভালো কারণ তখন সূর্যের সোনালী আভায় চারপাশের পরিবেশ অপার্থিব লাগে আর লোকজন কম থাকায় ছবি তুলতেও সুবিধে হয়। ব্রিজের এপার থেকে ওপার যেতে চাইলে আপনাকে প্রায় আধা ঘন্টা থেকে এক ঘন্টা হাটতে হতে পারে।
পর্যটকদের জন্য নিউ ইয়র্কের একটি অন্যতম আকর্ষন মিউজিয়াম অব মডার্ন আর্ট। এই মিউজিয়ামের ব্যপারে সবচেয়ে ভালো খবরটা আগে বলে রাখি। প্রতি শুক্রবার বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এখানে প্রবেশ ফ্রী! সুতরাং বুদ্ধি করে শুক্রবারে গেলে আপনার অনেক টাকা বাঁচবে। এবার বলি কেন নিউ ইয়র্ক গেলে এই মিউজিয়ামে আপনাকে যেতেই হবে।
এখানেই আছে ভ্যান গগের বিখ্যাত “স্টারি নাইট” আর ক্লদ মোনে’র “ওয়াটার লিলিজ” নামক জগদ্বিখ্যাত দুটি চিত্রকর্ম। এগুলো ছাড়াও বিখ্যাত আরো অনেক চিত্রশিল্পীদের অসাধারণ কিছু চিত্রকর্ম রয়েছে এই মিউজিয়ামে। এত বিশাল এই মিউজিয়াম যে একদিনে পুরোটা দেখা প্রায় অসম্ভব। সুতরাং মিউজিয়ামে ঢুকেই সোজা ৫ম ফ্লোরে চলে যাবেন।
এগুলো ছাড়াও নিউ ইয়র্কের “ন্যাচারাল হিস্টোরি মিউজিয়াম” দেখতে যেতে পারেন। এটি শিশুদের মধ্যে বিশেষভাবে জনপ্রিয়। এই মিউজিয়ামে প্রবেশ করতে কোন টাকা লাগে না।
নিউ ইয়র্ক যেতে হলে প্রথমে আপনাকে ইউ এস ট্যুরিস্ট ভিসা করতে হবে। ইউ এস ভিসা এর জন্য কিভাবে এপ্লাই করবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ও ভিসা প্রসেসিং সার্ভিস পেতে কল করুন +৮৮-০৯৬১৭-১১১-৮৮৮ নাম্বারে অথবা ইমেইলে যোগাযোগ করুন।
গালফ এয়ারওয়েজ, এতিহাদ এয়ারওয়েজ, ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ, কুয়েত এয়ারওয়েজ, টার্কিশ এয়ারলাইন্স, কাতার এয়ারওয়েজ, ফিনএয়ার থেকে প্রতিদিন অসংখ্য ফ্লাইট ছেড়ে যায় নিউ ইয়র্কের উদ্দেশ্যে। ঢাকা থেকে নিউ ইয়র্ক বিমান ভাড়া কত জানতে ভিজিট করুন flightexpert.com। কমপক্ষে এক মাস আগে টিকেট কাটলে ভাড়া অনেক কমে পাবেন।
ঢাকা থেকে নিউ ইয়র্ক যেতে প্রায় ২৩ ঘন্টার মতো লাগে। কমপক্ষে ৫ দিন হাতে নিয়ে নিউ ইয়র্ক ঘুরতে গেলে সব স্পট কভার ও নিউ ইয়র্ক শহর ভালো করে উপভোগ করতে পারবেন।
নিউ ইয়র্কের সেরা বাজেট হোটেলগুলো হলোঃ
JFK Inn- Hotel JFK Airport New York
বাংলাদেশ থেকে নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ খরচ নিম্নরুপঃ
রিটার্ন প্লেন ভাড়া - ১,৮৭,০০০ টাকা
হোটেল রুম ভাড়া - ১০,০০০ - ১২,০০০ টাকা
সিম কার্ড - ৪,০০০ টাকা
খাবার - ১,০০০ টাকা (প্রতি মিল)
সুতরাং, যাতায়াত ও প্রবেশ ফি বাদে আপনার নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ খরচ পড়বে জনপ্রতি প্রায় ২,৯৬,০০০ টাকার মতো।
তো এই ছিলো আমাদের নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ গাইড। ঢাকা থেকে নিউ ইয়র্ক বিমান ভাড়া সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন flightexpert.com। ভিসা ও হোটেল সম্পর্কিত তথ্যের জন্য কল করুন +৮৮-০৯৬১৭-১১১-৮৮৮ নাম্বারে অথবা ইমেইলে যোগাযোগ করুন।
ব্লগটি ভালো লাগলে ও আরো ব্লগ পড়তে চাইলে ভিজিট করুন আমাদের ব্লগ পেইজটি।
Related Blogs:
ঢাকা থেকে চেন্নাই এর সেরা হাসপাতাল-এ গিয়ে চিকিৎসা নিতে যা যা করা লাগবে
সপরিবারে হায়দ্রাবাদ ভ্রমণঃ দর্শনীয় স্থান, ভ্রমণ খরচ ও অন্যান্য
বাংলাদেশীদের জন্য নেপাল ভ্রমণ গাইডঃ ভ্রমণ খরচ ও দর্শনীয় স্থানসমূহ
List of Best Hotels in Bangladesh
List of Best Hotels in Bangladesh
List of Best Hotels in Bangladesh
Biman Bangladesh Airlines – 12 Reasons to fly with Biman
By Rahat Muna
July 26, 2022
Thinker & Designer