List of Best Hotels in Bangladesh
ইকোনমিস্টের মতে বাজেট ট্রাভেলিং বা স্বল্প খরচে ঘোরাফেরার জন্য যেকয়টি দেশ ট্রাভেলারদের পছন্দ, সেগুলোর মধ্যে থাইল্যান্ডের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি। স্বল্প খরচ ও স্বল্প সময়ে ঘুরে ফিরে আসার মতো দেশ তো আমাদের আশেপাশে খুব একটা নেই। তবে থাইল্যান্ডই সই!
বাংলাদেশ থেকে সরাসরি থাইল্যান্ড যেতে প্রায় ৩ ঘন্টার মতো সময় লাগে। সরাসরি থাই দূতাবাস থেকে ভিসা প্রসেস করতে না পারলেও এই ঠিকানায় যেয়ে করতে পারেন। বাংলাদেশ থেকে সাধারণত থাই এয়ারওয়েজ, বাংলাদেশ বিমান, মালেশিয়ান এয়ারওয়েজ ইত্যাদি এয়ারলাইনগুলো থাইল্যান্ড রুটে চলে। আগেভাগে টিকিট করে রাখলে বেশ সস্তায় টিকিট পাবেন।
এবার আসা যাক ঘোরাফেরায়। কোথায় ঘুরবেন? কি খাবেন? কোথায় থাকবেন?
ব্যাংককের সুবর্ণভূমি এয়ারপোর্ট থেকে নেমে প্রথমেই কিছু ডলার থাই মুদ্রা বা বাথে ভাঙ্গিয়ে নিন যাতে আপনি এয়ারপোর্ট থেকে ব্যাংকক সিটিতে যেতে পারেন। পয়সা বাঁচাতে চাইলে এয়ারপোর্টের ভেতরেই শহরগামী ট্রেইন আছে। সুন্দর, ছিমছাম, আরামদায়ক ও সস্তা। মোটামুটি ১০০ বাথের মধ্যেই শহরের যেকোন যায়গায় পৌছে যেতে পারবেন। আর একটু বেশি আয়েস করে যেতে চাইলে এয়ারপোর্টের বাইরে ক্যাব ধরুন। ৪০০-৫০০ বাথ পর্যন্ত লাগতে পারে। এয়ারপোর্ট ছাড়ার আগেই সেখান থেকে একটা সিম কার্ড কিনে রাখুন। গোটা যাত্রাপথে আপনার আর কিছু কাজে আসুক, না আসুক- এই সিম কার্ড ঠিকই কাজে লাগবে।
ব্যাংকক থেকে পাতায়া যেতে বাসে মাত্র ২ ঘন্টা সময় লাগে। পাতায়া যেন গোটা বিশ্বের আমুদে মানুষের জন্য জম্ফা। এখানে দেখার মতো জায়গা হল কোরাল আইল্যান্ড , রিপ্লিসের বিলিভ ইট অর নট, ওয়াকিং স্ট্রীট , ফ্লোটিং মার্কেট ইত্যাদি । এখানে বীচ রোডে খাবার জন্য সব ধরণের রেস্তোরা আছে। এমনকি খাঁটি বাঙালি রেস্তোরাও পাবেন। পাতায়া গেলে প্রচুর হাটতে হয়, তাই প্রতি কদমে কদমে ম্যাসাজের দোকান। বিভিন্ন ধরনের ম্যাসাজের চার্ট নিয়ে রমনীরা/লেডিবয়রা দোকানের সামনে আপনাকে অফার করবে, তাই অন্য কিছু না করলেও ফুট ম্যাসাজটা করে দেখতে পারেন। ভাল লাগার কথা। ১৬০-২০০ বাথ নেয় প্রতি ঘন্টা। এখানে আরো আছে টাইগার পার্ক- বাঘ দেখতে পাবেন। শ্যুটিং প্র্যাক্টিস করার জন্যে কাছেপিঠে শ্যুটিং পার্কও আছে!
ওয়াকিং স্ট্রীট যেখানে শেষ, সেখান থেকেই ফেরিতে যেতে পারেন। জাহাজ ছেড়ে কোরাল দ্বীপে যায়, ভাড়া মাত্র ৩০ বাথ। প্রতি ২ ঘন্টা পরপর এই জাহাজগুলো কোরাল দ্বীপে যায় আবার সেখান থেকে পাতায়া ফিরে আসে। তাই আপনি যতক্ষন খুশি কোরালে কাটাতে পারবেন। গোটা কোরালে ২-৩ টা বিচ আছে যেখানে চাইলে আপনি ২০-৩০ বাথ দিয়ে বাইকে করে ঘুরে আসতে পারবেন। বেশ ভালো কিছু লোকাল শপ ও ফুড পাবেন। তাই কোরালে দুপুরের ভোজটা সেরে নেওয়া এক ধরণের অত্যাবশ্যক কাজের মধ্যেই পড়ে।
পাতায়া ঘোরা শেষ হলে ব্যাংককে রাজত্ব করুন। বাংলাদেশিরা এখানে এলে সুকুমভিত এলাকার অ্যাম্বাসাডর হোটেলেই বেশি থাকে। সুকুমভিতে রুম ভাড়া ৫০০ থেকে পাঁচ হাজার বাথ। সেক্ষেত্রে বাজেট ট্যুরিস্টদের আগেভাগে হোটেল বুক করে রাখাই ভালো। ব্যাংককে ভ্রমণপিপাসুদের জন্য আছে নানারকম ব্যবস্থা। ওশান ওয়াল্ড, সাফারী ওয়াল্ড, ফ্লোটিং মার্কেট, মাদাম তুসো এগুলো তো দেখবেনই! সেই সাথে গ্র্যান্ড প্লাজায় না ঘুরলে আপনার কেনাকাটার অভিজ্ঞতাটা অপূর্ণই থেকে যাবে।
রাতের ব্যাংকক অন্যরকম। আদিম ও আধুনিক। রহস্যময় ও সুন্দর। লোকে বলে- ব্যাংকক নাকি সারাদিন ঘুমায়। ব্যাংকক জেগে ওঠে রাতে। রাত যতোই হোক, হোটেল থেকে বের হয়ে রাস্তায় ঘুরতে বেরোবেন, দেখবেন দিনের নির্জন ফুটপাথই হয়ে উঠেছে রাতের ডিজে স্ট্রিট, রমণীদের আনাগোনা, নানা বর্ণের মানুষের আড্ডা, মদের দোকানগুলোয় উচ্চস্বরে গানের সাথে উপচে পড়া ভীড়।
সময় পেলে ঘুরে আসুন থাইল্যান্ডের পুরনো রাজধানী ধনবুবেরের বিখ্যাত স্নেক ফার্ম। একই দিনে ঘুরে দেখতে পারেন চায়না টাউন, সিয়াম ডিসকভারি শপিং মল, ১৫০ বছরের পুরনো রামা ৫-এর বাসস্থান ভিমানমেক ম্যানশন, চাতুচাক পার্ক, সাবওয়ে ও থাইল্যান্ডের সবচেয়ে উঁচু বিল্ডিং বাইওকি স্কাই হোটেল। আর সেই সাথে চলতে থাকা অবিরাম কন্সার্ট, ডিজে পার্টি, ক্যারিবিয়ান হল্লা- এসব সারাক্ষণ তো লেগেই থাকে!
ব্যাংকক ঘোরা শেষে ফ্লাই করুন সরাসরি ফুকেটে। মানুষজন সাধারণত হানিমুন করতে এই যায়গাটাকে আলগা একটু কদর করে থাকে। কেন করে সেটা গেলেই টের পাবেন। ফুকেটে থাকার জন্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় জায়গা হল পাতং বিচ এরিয়া। ফুকেট এয়ারপোর্টে নেমে পাতং বিচ এরিয়ার জন্যে একটা গাড়ি ভাড়া করে ফেলবেন। ফুকেট এয়ারপোর্ট থেকে পাতং আসার পথে আপনার গাড়ির ড্রাইভার অবশ্যই মাঝ পথে কিছু ট্রাভেল এজেন্সির অফিসের সামনে দাঁড়াবে। এটা ওদের এক ধরণের ব্যবসা। এখানের ট্রাভেল এজেন্সি গুলো বিভিন্ন রকম প্যাকেজ দেয়- ফি ফি, ক্রাবি, জেমস বন্ড আইল্যান্ড ইত্যাদির জন্যে। এর মধ্যে হোটেল থেকে গাড়িতে করে পোর্ট এ নিয়ে যাওয়া, শিপে করে ফি ফি আইল্যান্ডে যাওয়া, ফি ফি তে দুপুরের খাবার, ১ ঘণ্টা স্নোরকেলিং করা, পরদিন শিপে করে ফুকেট ফিরে আসা ও পোর্ট থেকে এয়ারপোর্ট ড্রপ করা অন্তর্ভুক্ত করে একটা প্যাকেজ নিয়ে ফেলতে পারেন। অথবা নিজেরাই একটা প্ল্যান করে নেমে পড়তে পারেন। সেক্ষেত্রে তৃতীয় কারো ধার আপনাকে ধরতে হবে না। বলে রাখা ভালো- শুধুমাত্র প্যাকেজই নয়, গোটা থাইল্যান্ডের যেকোন ট্রাভেল এরিয়ায় দামাদামি করবেন। ওরা চাইনিজদের মতো আকাশ পাতাল দাম না চাইলেও ওদের রেটটা একেবারে কমও না!
ফি ফি নিয়ে কিছু কথা জানিয়ে রাখি- ফি ফি থেকে আপনি চাইলে ক্রাবি, কো সামুই, কো তাও ঘুরে আসতে পারেন। আর কাছাকাছি আছে মায়া বে, মাংকি আইল্যান্ড ইত্যাদি। ফি ফি-তে রাতে থাকা স্ট্রংলি রেকমেন্ডেড। রাতে বিচের পাড়ে বার গুলোতে পার্টি হয়, সবার জন্যে খোলা। সেখানে যাবেন। মানুষ দেখবেন। আলোর ঝলকানি দেখবেন। উপভোগ করবেন।
সব কিছুই তো শেষ হয়। এই যাত্রাও শেষ হবে। এসব সুন্দর স্মৃতিগুলো নিয়ে আবার এই প্রত্যাহিক জীবনে ফিরে আসা- ক্ষতি কী! চলুক!
List of Best Hotels in Bangladesh
List of Best Hotels in Bangladesh
List of Best Hotels in Bangladesh
Biman Bangladesh Airlines – 12 Reasons to fly with Biman
By Rahat Muna
July 26, 2022
Thinker & Designer